ফিতায় মেপে পশুর ওজন নির্ণয় (আনুমানিক)ঃ
(আনুমানিক ওজন) = (দৈর্ঘ্য (ইঞ্চি) L X বুকের বেড় (ইঞ্চি) G )/ ৬৬০ = পশুর মোট ওজন।
(ধরে নিলাম আপনার পশুটির দৈর্ঘ্য ৫১ ইঞ্চি এবং বেড় ৫৬ ইঞ্চি। তাহলে পশুর আনুমানিক ওজন হবে (51X56)/660 = 242.33 কেজি
একটি জীবিত গরুর ওজনের ৫০% হচ্ছে রক্ত, হাঁটু থেকে পা, মাথা, চামড়া এবং ভুড়ি এর মিলিত ওজন। অর্থাৎ বাকি ৫০% ওজন পাওয়া যায় হাড় মিশ্রিত মাংস এবং অন্যান্য অঙ্গ – কলিজা, ফুসফুস, কিডনি ইত্যাদি থেকে।
দাঁত দেখে বয়স নির্ণয়ের পদ্ধতি সম্পর্কেঃ
– জন্ম থেকে এক মাস সময়ের মধ্যে অস্থায়ী দাঁত উঠতে শুরু করে। অস্থায়ী দাঁত চেনার সহজ উপায় ও রয়েছে কিন্তু! অস্থায়ী দাঁত, স্থায়ী দাঁতের তুলনায় ছোট এবং সাদা হয়ে থাকে।
– জন্মের এক মাসের মধ্যে ৮টি অস্থায়ী কর্তন দাঁত গজায়।
– জন্মের এক বছরের মধ্যে সামনের মাঝের দুইটি অস্থায়ী দাঁত পড়ে যায় এবং “স্থায়ী” (ইনসিজর) ২টি দাঁত উঠে। দাঁত ২টি আকারে পাশের দুটি দাঁত থেকে বেশ বড় হয়।
– গরুর ২টি স্থায়ী দাঁত উঠলে গরুর বয়স ১৯ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২ বছর হয়ে থাকে।
– গরুর বয়স দুই থেকে আড়াই বছর হলে সামনের স্থায়ী দাঁত (ইনসিজর) আকার আরো বড় হয়ে উঠে।
– দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে মাঝের দুইটি স্থায়ী দাঁতের দুই পাশে আরো একটি করে মোট দুইটি স্থায়ী দাঁত ওঠে। ফলে জন্মের আড়াই বছরে গরুর স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা হয় চার।
– তিন বছরের মাঝে পাশের দুইটি স্থায়ী দাঁতও পূর্ণ আকৃতি ধারণ করে।
– গরুর বয়স তিন বছর হলে চারটি স্থায়ী দাঁতের পাশে আরো দুইটি দাঁত ওঠে। ফলে তখন স্থায়ী দাঁতের সংখ্যা হয় ছয়টি।
– গরুর বয়স যখন চার থেকে পাঁচ বছর তখন নিচের পাটির আটটি স্থায়ী দাঁতই দেখা যায়।
– গরুর বয়স ৫-৬ বছর হলে সামনের দুটো দাঁত ক্ষয় হয়ে সমান হয়ে যায় এবং পাশের বাকি দাঁতগুলোতে ক্ষয়ের চিহ্ন লক্ষ্য করা যায়।
– গরুর বয়স ৭-১০ বছর হলে সামনের দাঁতগুলোর ক্ষয়ের পরিমাণ খুব বেশি লক্ষ্য করা যায় এবং তা দেখতে অনেকটা ভাঙ্গা ভাঙ্গা দেখায়।
– গরুর বয়স ১০-১২ বছরের মাঝামাঝি হলে দাঁতগুলো ক্ষয় হয়ে অনেকটা তিনকোণা আকৃতি ধারণ করে এবং এক দাঁত থেকে অন্য দাঁতের দূরত্ব তৈরি হয়।
কোরবানির পশুর বয়সসীমা যেমন হতে হবে
ঈদুল আজহায় উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ছাগল ও ভেড়া কোরবানি করা যায়। তবে এসব পশুর একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা রয়েছে। সে অনুযায়ী বয়স না হলে, এগুলো জবাই করলে কোরবানি হবে না।
উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি এক বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক বছরের মতো মনে হয়, তাহলে কোরবানি করা জায়েজ। অবশ্য এক্ষেত্রে বয়স কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে।
গরুর শারীরিক সুস্থ্যতার বিষয়। সুস্থ গরু চিনবেন কীভাবেঃ
গরুর বয়স ন্যূনতম ২ বছর হলেই এটা কুরবানীর জন্য উপযুক্তহ হবে। দাঁত দেখে বয়স নির্ণয় করা যায়। দাঁতের সংখ্যা হতে হবে ৪ বা তার বেশি। যারা ছাগল দিবেন তারা প্রথমে দেখবেন ছাগলের বয়স কমপক্ষে এক বছর হওয়া উচিত। উটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে পাঁচ বছর ভেড়ার ক্ষেত্রে কমপক্ষে এক বছর বয়স হতে হবে, তবে ছয় মাস বয়সী ভেড়া যদি সাইজে বড় হয় অর্থাৎ যদি দেখতে এক বছর বয়সের মত দেখায় তাহলে সেই ভেড়া কোরবানি করা যাবে।
দিনের আলো থাকতে আপনার পছন্দের পশু কেনা ভালো। কেননা রাতের বেলায় পশু রোগাক্রান্ত নাকি সুস্থ তা ভালোভাবে বোঝা যায় না।
– পশুর মুখের সামনে খাবার ধরলে যদি জিহ্বা দিয়ে টেনে নেয় এবং নাকের উপরে ভিজা থাকে তাহলে বুঝতে হবে গরুটি সুস্থ।
– বড় গরু গুলা না কেনাই ভাল। কারন বড় সাইজের গরুগুলোকে ইনজেকশন বা হরমোন ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় বেশি। মিডিয়াম সাইজের গরু কেনা নিরাপদ।
– অস্বাভাবিক মোটা গরু বিভিন্ন ঔষধ দিয়ে মোটাতাজা করে হাটে নিয়ে আসতে পারে। তাই এধরণের গরু বর্জন করুন।
– রাসায়নিক যুক্ত গরু ভীষণ ক্লান্ত থাকবে এবং ঝিমাবে। এগুলো শ্বাস প্রশ্বাস দ্রত নিবে, মনে হবে যেন হাপাছে মুখ দিয়ে প্রতিনিয়ত লালা পরবে।
– গরু কেনার আগে গরুর শারীরিক গঠন যেমনঃ শিং ভাঙ্গা আছে কিনা, লেজ, মুখ, দাঁত, খুর এসব কিছুই পরীক্ষা করে দেখুন, কোন খুঁত চোখে পড়ে কিনা। শরীরের কোথাও ক্ষত আছে কিনা পরীক্ষা করে নিন।
– গর্ভবতী গরু কোরবানি দেওয়া হারাম। তাই সবার আগে সেটা নিশ্চিত হয়ে নিন।